সোনাই নিউজ:আমরা অসহায়। পথে ঘাটে লাঞ্চিত হচ্ছি। বিলান জমি জোর করে দখল করে নিচ্ছে। জুয়াড়ীদের কাছে লিজ দিচ্ছে আমাদের বাগান বাড়ি’।
মঙ্গলবার দুপুরে এমন নানা অভিযোগ করেন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাদুরতলা গ্রামের ১৮টি সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের নারী-পুরুষ সকলে।
ক্ষমতাসীন দলের নামে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা স্থানীয় কতিপয় উশৃঙ্খল ব্যক্তির একটি চক্র ওই ১৮টি পরিবারের ফসলি জমি দখল করে নিচ্ছে। বাগান লিজ দিয়ে সেখানে গোপন বৈঠক, জুয়া ও মাদকের আসর বসাচ্ছে। নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন ও হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। ফলে বাপ-দাদার ভিটে-মাটিতে তারা স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পাছে না।
অভিযোগে জানা গেছে, বাদুরতল গ্রামের ১৮টি হিন্দু পরিবার নানাভবে নির্যাতিত। এরা হচ্ছেন, অতুল চন্দ্র হালদার, রাখাল মাঝি, জগদীশ হালদার, তরুণ হালদার, সঞ্জীব দর্জী, কমল সুতার, ক্ষুদিরাম মন্ডল, রবিন্দ্রনাথ হালদার, সুভাস মাঝি, তপন মাঝি, দিনেশ মিস্ত্রী, কালিপদ মিস্ত্রী, সন্ত্রেন্দ্রনাথ ঢালী, সন্তোষ ঢালী, পরিতোষ ঢালী, কৃষ্ণকান্ত মিস্ত্রী, রাম কৃষ্ণ মাঝি ও পরিতোষ হালধার।
ভূক্তভোগী অতুল চন্দ্র হালদার, রাম কৃষ্ণ মাঝি, তরুণ হালদার বলেন, স্থানীয় জাহাঙ্গীর হাওলাদার আ. লীগ নেতা ফরুক শেখসহ ৪/৫ জনের একটি চক্র এক বছল পূর্বে রাখাল মাঝির ৪৬ শতক ফসলি জমি দখল করে নেয়। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাখাল মাঝিকে সেই জমির দখল বুঝিয়ে দেন। কৃষ্ণকান্ত মিস্ত্রীর ৮ম শ্রেণিতে পডুয়া মেয়েকে জোরপূর্বক বিয়ে করেন এই চক্রের প্রধান জাঙ্গীর হাওলাদার। এর পরে কৃষ্ণকান্ত স্বপরিবারে ৭/৮বছর ধরে এলাকার বাইরে অবস্থান করে আবার ফিরে আসেন।
হালদার বাড়ীর বাগানে বসানো হয় জুয়া ও মাদকের আসর। জুয়াড়ীদের কাছে এই বাগানটি মাসে ১ হাজার টাকায় ইজারা দেয় প্রভাবশালী ওই চক্রটি।
সর্বশেষ, গত শুক্রবার অতুল হালদারের পূর্ব পুরুষ থেকে ভোগ দখলীয় এক একর ১২ শতক ফসলী জমিতে আকস্মিকভাবে চাষাবাদ শুরু করেছেন বাদুরতলা গ্রামের জাহাঙ্গীর হাওলাদার, ফারুক শেখ ও তাদের সহযোগীরা।
এসব অত্যাচারের বর্ণনা দিতে গিয়ে রাম কৃষ্ণ মাঝি বলেন, ‘আমরা কোথাও ন্যায় বিচার পাচ্ছি না। অজ্ঞাত কারণে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন ইউপি চেয়ারম্যান।
এভাবে অন্যায় অবিচার না করে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদেরকে বলে দিলেই আমরা সবকিছু রেখে চলে যেতে রাজি আছি’। এ সময় অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন অতুল চন্দ্র হালদার।
এদিকে জাহাঙ্গীর হাওলাদার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ফারুক শেখ ও আমি ক্রয় সূত্রে ওই জমিতে চাষাবাদে গিয়েছি। অন্যায় কিছু করা হয়নি।’