সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বনের মধ্যে স-মিল স্থাপনের কাজ চললেও দেখছেন না কেউ, এ যেনো মগের মুল্লুক। পরিবেশ ও বনবিভাগের ছাড়পত্র ও বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে উঠছে স-মিলটি। তবে স-মিল মালিক বিধান চন্দ্র হাওলাদার রেকর্ডীয় জমি দাবি করলেও স্বপক্ষ কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেন নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের তুলাতলী এলাকায় স-মিলটি স্থাপন করা হচ্ছে। স-মিলের দক্ষিণ পার্শ্বে ৪৮নং পোল্ডারের পাউবো বেড়িবাঁধের সরকারি জমি আর উত্তর পার্শ্বে খাপড়াভাঙ্গা নদী, মাঝখানে বনবিভাগের বাগান। মিলের পাশে রয়েছে কেওড়া, গোলগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। মাটির নিচে গোলগাছ চাপা দিয়ে স-মিলের ট্রলী বসানো হয়েছে। মিল স্থাপনের পূর্ব পরিকল্পনা হিসেবে আগেভাগেই দু’টি কুটাকুড় বসানো হয়েছে। আর চলমান লকডাউনের সুযোগে স্থাপন করা হচ্ছে করাত কলটি।
স্থানীয় সূত্র মতে জানা যায়, স-মিল স্থাপনের জন্য বন বিভাগের লাইসেন্স প্রাপ্তির পর নিতে হয় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। ফলে যত্রতত্র স-মিল স্থাপনের কারণে হুমকিতে রয়েছে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ।
স-মিল লাইসেন্স বিধিমালা ২০১২-র আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা রয়েছে, করাত কল স্থাপন বা পরিচালনার জন্য লাইসেন্স ফি বাবদ ২০০০ টাকা ‘১/৪৫৩১/০০০০/২৬৮১ (বিবিধ রাজস্ব ও প্রাপ্তি)’ খাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বা যেকোন সরকারি ট্রেজারিতে জমাপূর্বক উহার ট্রেজারি চালান আবেদনপত্রের সহিত সংযুক্ত না করলে আবেদনপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না।
সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান ও জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানের ২০০ মিটারের মধ্যে স-মিল স্থাপন করা যাবে না। বিধিমালায় আরো বলা আছে, এ আইন কার্যকর হওয়ার আগে কোনো নিষিদ্ধ স্থানে স-মিল স্থাপন করা হয়ে থাকলে আইন কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। যদি তা না করা হয় তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তা বন্ধের জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। কিন্তু আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই।
স-মিল মালিক বিধান চন্দ্র হাওলাদার বলেন, আশেপাশে সরকারি জমি থাকলেও মিলটি রেকর্ডীয় জমিতে বসানো হয়েছে। আমি বন বিভাগের একটি গাছও নষ্ট করিনি।
এ ব্যাপারে মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: আবুল কালাম আজাদ বলেন, নতুন স-মিল স্থাপনের বিষয়টি আমার জানা নেই। চলমান লকডাউনের সুযোগ নিয়ে মিলটি স্থাপন করা হচ্ছে। আমি খোঁজ-খবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: আমিনুল ইসলাম গনমাধ্যমকে বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা, বনবিভাগের কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয়া হয়নি। তদন্ত করে দ্রæত আইনঅনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হরে।