ভারতের বেসরকারি একটি সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লাদাখসংলগ্ন পাওয়ার গ্রিডগুলোর নেটওয়ার্কে হ্যাকারদের অনুপ্রবেশ লক্ষ করেছে তারা। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি খবরটি নিশ্চিত করে।
চীনের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন হ্যাকাররা আট মাস ধরে লাদাখের কাছে ভারতীয় বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্রগুলো টার্গেট করেছে। বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে সামনে এসেছে এমন সব তথ্য।
যদিও কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, চীনের এই সাইবার আক্রমণ সফল হয়নি। পূর্ব লাদাখ সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই ভারত ও চীনের মধ্যে অস্থিরতা রয়েছে। যদিও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দুই দেশের মধ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চলছে। সম্প্রতি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে এসেছিলেন।
তিনি কথা বলেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে।
বেসরকারি সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লাদাখসংলগ্ন পাওয়ার গ্রিডগুলোর নেটওয়ার্কে হ্যাকারদের অনুপ্রবেশ লক্ষ করেছে তারা। হ্যাকারদের টার্গেটে ছিল ভারতীয় সাত রাজ্যের পাওয়ার গ্রিড। চীনা হ্যাকাররা মূলত নিশানা করেছিল উত্তর ভারতের কাছে ভারত-চীন সীমান্তের কাছাকাছি পাওয়ার গ্রিডগুলো।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, গত বছর আগস্ট থেকে মার্চ মাসের মধ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটেছিল। তদন্তে জানা গেছে, ভারতীয় লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারগুলোর ডেটা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা চীনা রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত কমান্ড ও কন্ট্রোল সার্ভারগুলোতে পাঠানো হয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, এসব তথ্য আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি চীনা হ্যাকারদের সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারকে সতর্কও করা হয়েছিল।
তবে ভারতের বিদ্যুৎমন্ত্রী কে সিং সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, লাদাখের কাছে বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্রগুলো যে চীনা হ্যাকারদের টার্গেটে পড়তে পারে, তা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকার আগেই অবগত ছিল। দুবার সেগুলো টার্গেট করা হয়েছিল। কিন্তু চীনা হ্যাকারদের প্রচেষ্টা সফল হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, চীনা রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত হ্যাকাররা বর্তমানে খুবই শক্তিশালী। চীনের হ্যাকাররা সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোগুলোর আশপাশের তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছিল।
বিশ্বজুড়ে সাইবার আক্রমণের পরিমাণ বাড়ছে। গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে লক্ষাধিক মানুষ একটি বড় গ্যাস পাইপলাইনে ব়্যানসমওয়্যার হামলায় আক্রান্ত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়াও এ-জাতীয় সাইবার হামলার মুখোমুখি হয়েছিল।
ভারত ও চীনের মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কিলোমিটার সীমান্ত। যার অধিকাংশ এলাকা চীনের বিরূপ আচরণের শিকার। এর মধ্যেই চীনা হ্যাকারদের আচরণ সমস্যা আরও জটিল করে তুলতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে।