পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউপির আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে ফরম বিতরণে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলম হাওলাদারের বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে মনোনয়ন পত্র বিতরণের সময় প্রভাব বিস্তার ও বহিরাগত লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ের কাজে বাঁধা প্রদান করেন বলে অভিযোগ উঠেছে ঐ ইউপি সদস্য’র বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, শনিবার বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির ফরম বিক্রির কথা থাকলে উৎসবমুখর পরিবেশে অভিভাবকরা ফরম নিতে আসেন। এ সময় ইউপি সদস্য আলম হাওলাদার অভিভাবকদের ফরম কিনতে বাঁধা প্রদান সহ অকথ্য ভাষায় সংবাদ কর্মীদের গালিগালাজ করেন। অভিযোগ উঠেছে তিনি প্রধান শিক্ষকের টেবিলে থাপ্পড় দিয়ে অনেক উচ্চবাচ্য কথা বলেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.ইউনুচ এবং মহিলা ইউপি সদস্য অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।
স্থানীয় সমাজসেবক এবং বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও অভিভাবক আবদুর রহমান মুছুল্লী জানান, আমি সহ আমার চারটি সন্তান এই স্কুলে লেখাপড়ার সুবাদে অভিভাবকদের সাথে আমি এখানে এসেছি। কিন্তু ইউপি মেম্বর বিষয়টি মানতে পারেনি। তিনি অভিভাবকদের হুমকি প্রদান করেন। এবং অভিভাবকগণ প্রধান শিক্ষকের কাছে টাকার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন কোন কথা হবেনা, আজকে দিতে হবে এটাই আইন।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আলম হাওলাদার জানান, এই স্কুলটি আমার বাবা প্রতিষ্ঠা করে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি সেখানে গিয়েছি। তখন কোন বহিরাগত লোক ছিলনা, ছাত্রদের অভিভাবক উপস্থিত ছিল। মনির হাওলাদার এবং তার ভাই কামাল
হাওলাদার আমার বংশের লোক এবং বিএনপি নেতা। তারা আমার সাথে ফরম বিতরণের বিষয় নিয়ে অহেতুক অশ্লীল ভাষায় গালামন্দ করে। প্রান নাশের হুমকি ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আমার উপর প্লাষ্টিকের চেয়া নিক্ষেপ করে। বিএনপির সময় কামাল
আমাকে রাস্তায় ওঠতে দেয়নি বহুবার মারধর ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। এখনো আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র ও অত্যাচার করে। তাই আমি নিরুপায় হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মহিপুর থানায় জিডি করেছি।
লতাচাপলী ইউপির ৭,৮ এবং ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মিনা রহমান জানান, নির্ধারিত সময়ে ফরম বিক্রির কথা থাকলে অনেক অভিভাবক এখানে উপস্থিত হন। এ সময় অভিভাবক মনির হাওলাদার প্রধান শিক্ষককে দুই হাজার টাকা
অগ্রীম নেয়া প্রসংগে জানতে চান। তখন আলম মেম্বর টেবিলে থাপ্পড় দিয়ে বলেন এটা সিদ্ধান্ত হয়েছে আজকেই দিতে হবে।
তখন মহিপুর প্রেসক্লাব সদস্য অভিভাবক মনির হাওলাদার বলেন নিয়ম মত না হলে নিউজ হতে পারে। এ কথা বলায় আলম মেম্বর তার উপর ক্ষিপ্ত হন। তিনি সাংবাদিকদের নিয়ে খুব বাজে মন্তব্য করেন। তিনি সাংবাদিক মনির এবং তার
ভাইকে অনেক হুমকি প্রদান করেন।
আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.ইউনুচ জানান, অভিভাবকগণ আমার কাছে বিভিন্ন বিষয় জানতে চাইলে ইউপি মেম্বর উচ্চ-বাচ্চ করেছেন। তখন স্থানীয় অভিভাবক এবং তার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। আমি এবং
মহিলা ইউপি সদস্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। তিনি আরও জানান, ম্যানেজিং কমিটি গঠনের সকল প্রক্রিয়া নিয়ম মেনে করা হবে।
৭নং লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, বিষয়টি মেম্বর আমাকে জানিয়েছেন। এটা তাদের পারিবারিক সমস্যা। তিনি আরও জানান,আমার ইউপির কোন বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন বিষয়ে আমি কোনদিন হস্তক্ষেপ করিনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল বাসার বলেন, আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে ফরম বিতরণে সময় ঝামেলার বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছেন। পরে উভয় পক্ষকে ডেকে সমাধান করে দিয়েছি।
নিয়ম অনুযায়ি আগামী মাসের তিন তারিখ পর্যন্ত নির্বাচন ফরমের টাকা জমা নেয়া হবে হবে।