বাঘা উপজেলা প্রতিনিধিঃরাজশাহীর বাঘায় এক সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে যৌতুক না পেয়ে তার স্ত্রীকে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।এঘটনায় সোমবার ২০ জুলাই সেনাসদস্যসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযোগে সূত্রে জানা যায়, বাঘা উপজেলার জোতনশী গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে সেনা সদস্য মাসুদ রানার সাথে বাঘা পৌর এলাকার নারায়নপুর গ্রামের ইব্রাহীম হোসেনের মেয়ে সাদিয়া আক্তার ইভার ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার মধ্য দিয়ে ৫ লক্ষ ১ টাকা দেন মোহর ধার্য্য করে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে মাসুদ রানা ও তার পরিবারের সদস্যরা নানাভাবে সাদিয়া আক্তার ইভার উপর নিযাতন করে আসছিল। গত ৭ জুলাই মাসুদ রানা ছুটিতে বাড়িতে আসে। এ সময় তার স্ত্রী পিতার বাড়িতে ছিল। ৮ জুলাই মাসুদ রানার পিতা আব্দুর রহমান সাদিয়া আক্তার ইভাকে পিতার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসে।
১৮ জুলাই দুপুরে তার স্ত্রীর কাছে ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করেন। গরীব পিতার পক্ষে এই টাকা দেয়া সম্ভব না বলে জানিয়ে দেয়া হয়। তারপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে প্যান্টের বেল্ট দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট শুরু করে। এই মারপিটের বিষয়টি পিতার পরিবারকে জানানো হয়। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে বাঘা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালের চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় সাদিয়া আক্তার ইভা বাদি হয়ে বাঘা থানায় ৪জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু মামলা দায়েরের পর থেকে মাসুদ রানা সহ তার পিতা মাতা বেপরোয়া হয়ে উঠেন। মাসুদ রানা পরিবারের সদস্যকে তার লোকজন দিয়ে নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।
বর্তমানে মাসুদ রানা ঢাকা ক্যান্টেমেন্টের সেনা সদস্য, সৈনিক নম্বর(২৪১৬৫৬৯) কার্ড নং-১৯৭৫০ কর্মরত আছেন।
সাদিয়া আক্তার ইভা জানান, আমার স্বামী অন্য এক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। তাকে বিয়ে করলে ১০ লক্ষ টাকা পাবে। আমার পিতার কাছে থেকে যদি ১০ লক্ষ টাকা এনে দিতে না পারি, তাহলে ওই মেয়েকে বিয়ে করবো। এমন কথা বলে আমাকে নির্যাতন করা হয়। আমি গরীর পিতার মেয়ে। নিরুপায় হয়ে সহ্য করে সংসার করার চেষ্টা করেও পারলাম না। আমি এর বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে সেনা সদস্য মাসুদ রানার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ১০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়নি কোন নির্যাতন করা হয়নি। বাবা মায়ের সংসারে এক সঙ্গে থাকা না থাকা নিয়ে মনোমালিন্য হয়।এক পর্যায়ে আমার সাথে কর্মস্থলে আসতে চায়।যেহেতু আমি সরকারী কোয়ার্টার পাইনি এ কারণে আমার সাথে আনতে অসম্মতি জানায়।মহামারি করোনা ঝুকি কমলে বাসা ভাড়া করে নিয়ে আসব।কিন্তু আমার স্ত্রী কোনভাবেই এই কথায় কর্ণপাত না করে সেনা সদস্য কার্ড লুকিয়ে রাখে।পক্ষান্তরে উপায় না পেয়ে ছুটি শেষ হওয়ায় কার্ড ছাড়ায় অফিসে হাজিরা দিয়েছি।বিষয়টি আমি আমার কতৃপক্ষকে জানিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)নজরুল ইসলাম বলেন, স্বামী স্ত্রীর গন্ডগোল নিয়ে ঐ সেনা সদস্যের স্ত্রী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যেহেতু একজন সেনা সদস্য, আসলে সে ছুটিতে ছিল কি না সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।