রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ১০:৩৪ অপরাহ্ন
Logo
শিরোনামঃ
বাঘায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারি ও শিক্ষার্থীর মানববন্ধন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে প্রধান উপদেষ্টার ঘর উপহার জয়পুরহাটে জামায়াতের মোটরসাইকেল শোডাউন সাভারে জমজমাট ক্রিকেট ফাইনাল, চ্যাম্পিয়ন রাসেল একাদশ নারী সংস্কার কমিশন বিলুপ্তির দাবিতে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ সাভারে শ্রমিকদের দুর্বল করা কাউকেই যেন রাষ্টীয় পদ বা জনপ্রতিনিধির জায়গা দেওয়া না হয়, আখতার শাহিনুর কবির, ঢাকা জেলার শ্রেষ্ঠ সার্কেল নির্বাচিত হলেন ঢাকা জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হলেন মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা সাভার উপজেলা সাংবাদিক সমিতির আহ্বায়ক সোহেল রানা, সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল নোমান ফেনীতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা ফলোআপ গণঅভ্যুত্থানে আহতদের
নোটিশঃ
দেশব্যাপি জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি আবশ্যক। নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ এস সি/ সমমান পাস। যোগাযোগঃ 01715247336

বাঘায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারি ও শিক্ষার্থীর মানববন্ধন

হাবিল উদ্দিন রাজশাহী প্রতিনিধি / ১
নিউজ আপঃ রবিবার, ৪ মে, ২০২৫

রাজশাহীর প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেককে দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, ঘুষখোর, চাঁদাবাজ ও স্বেচ্ছাচারী হিসেবে আখ্যায়িত করে মানববন্ধন করা হয়েছে। রোববার (০৪মে) দুপুরে ১টার দিকে একই ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে পদত্যাগ দাবি করেছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মহদিপুর-হেলালপুর (এম এইচ) বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারি ও শিক্ষার্থীরা। ক্লাস বর্জন করে উপজেলা পরিষদের সামনে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন তারা।
মানববন্ধনের ব্যানারে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেককে দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, ঘুষখোর, চাঁদাবাজ ও স্বেচ্ছাচারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ছবি সংবলিত ব্যানারে প্রধান শিক্ষকের ছবির উপর স্যান্ডেল ঝুলানো অবস্থায় দেখা গেছে। মানবন্ধনে ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বাবলি খাতুন বলেন,হেড স্যার দুর্নীতিবাজ,নতুন ফ্যান আনলে বাসায় নিয়ে যায়। কিছুদিন পর পর মিছিল মিটিং করে। এতে ক্লাস নষ্ট হয়। আজকেও (রবিববার-০৪-০৫-২০২৫) সাড়ে ৯টায় বহিরাগতদের নিয়ে হেড স্যার স্কুলে এসেছিল। তার হুমকি দিয়ে গেছে,গুলি করবো,তালা মেরে স্কুল বন্ধ করে দিবো। এসব হুমকিতে অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে বাড়িতে চলে গেছে। নিরাপত্তার জন্য আমরা এসেছি।
হেড স্যার দুর্নীতিবাজ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন,অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষায় ৫০০ টাকা করে নিছে। আবারও ৫০০ টাকা করে চাঁদা তুলছে। উপবৃত্তির জন্য শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নিয়েছে। উপবৃত্তি না আসলে সেই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল, কিন্ত দেয়নি। নিয়োগ দিয়ে ২৫ লাখ টাকা নিয়েছে। স্যারদের বেতন করেনা। দুর্নীতিবাজ,চাঁদাবাজ শিক্ষককে আমরা রাখতে চাই না।
হুমকি দাতাদের নাম জানতে চাইলে ,রুস্তম মোল্লা, আলম(১), আলম(২) সোহেল মোল্লা, পলাশ ও কুদ্দুসসহ প্রায় ১৫ জন এসেছিল বলে জানান ওই শিক্ষার্থী।
সহকারি প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ৪মাস আগেও আমরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে মানববন্ধন করেছিলেন। অনাস্থা ও পদত্যাগের দাবিতে অভিযোগও করেছেন। ২৯ জানুয়ারি’২৫ তদন্ত হলেও কার্যকরি কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আজকেও বহিরাগতদের নিয়ে জোর করে প্রধান শিক্ষক স্কুলে উঠতে গিয়েছিলেন। প্রধান শিক্ষক সন্ত্রাসী,চাঁদাবাজ ও ঘুষখোরের বিষয় জানতে চাইলে বলেন, শিক্ষককে মারাধরা,মহিলা শিক্ষককের কাপড় খুলে নেওয়া ও চতুর্থ কর্মচারিকে নিয়োগ দিয়ে ২৫ লাখ টাকা বাগিয়ে নেওয়ার কথা বলেন ওই শিক্ষক।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদ জানান, তার স্কুলে ১২ জন শিক্ষক ও ৬ জন কর্মচারি রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক ও নিরাপত্তা প্রহরি বাদে সবাই ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন কর্মসুচিতে এসেছেন। অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আছিয়া খাতুন,সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সহ কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে ক্লাস শুরু হয়। তারা স্কুলে আসেন সাড়ে ৯টা থেকে ১০ টার মধ্যে।
রুস্তম মোল্লা জানান আমরা মিমাংসার জণ্য গিয়েছিলাম। প্রধান শিক্ষক স্কুলে যাওয়ার পর শিক্ষক -শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে চলে যায়। হুমকি দেওয়ার কথা সত্য নয় দাবি তার। জানা যায়, গত ২০ জানুয়ারি’২৫ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে, প্রধান শিক্ষকের সাথে সহকারি শিক্ষকদের হাতাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় সহকারি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগও উঠে। পরের দিন ২১ জানুয়ারি’২৫) বিদ্যালয়টির ২৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে উপজলা নির্বাহি অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। গত ২২ জানুয়ারি’২৫ দুপুরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একই ব্যানারে প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেককে দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, ঘুষখোর, চাঁদাবাজ ও স্বেচ্ছাচারী আখ্যায়িত করে শিক্ষক কর্মচারী-ছাত্রী ও এলাকাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন হয়েছিল। সেই সময় নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিদ্যালয় পরিচালনাসহ নিয়োগ বাণিজ্য করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়।
বক্তব্য রেখেছিলেন, সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম, রফিকুল ইসলাম, ইংরেজি শিক্ষক জাকির হোসেন, নৈশ প্রহরি মোকসেদ আলী, শিক্ষার্থী মেঘলা ও নদী।
পরিছন্নতা কর্মী আবু জার জানিয়েছিলেন, চাকরি নিতে প্রধান শিক্ষককে ১২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। তাদের ভাষ্যমতে , প্রধান শিক্ষক নিয়ম বর্হিভূতভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করে, ২৪ লক্ষ টাকার বাণিজ্য’র মাধ্যমে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারিকে নিয়োগ দিয়েছেন। সেই টাকায় বিদ্যালয়ের উন্নয়নের দাবি করায় সহকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে তর্ক বিতর্ক হয় প্রধান শিক্ষককের । পরে প্রধান শিক্ষক মারপিট করে। পরে হাতা হাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়ে।
প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক বলেন, প্রধান শিক্ষক হিসেবে স্থানীয়দের নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম। পরে শিক্ষকরা কৌশল করে আমাকে স্কুলে উঠতে দেয়নি। পরে শুনছি উপজেলায় গিয়ে মানববন্ধন করেছে। এর আগেও ওই শিক্ষক-কর্মচারী একত্রিত হয়ে আমার গায়ে হাত দেয়। হাতা হাতির পর ধাক্কাতে ধাক্কাতে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়েছে। তিনি জানান, ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল-নিরাপত্তা কর্মী আসাদুল ইসলাম ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী আবু জারকে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিগত আওয়ামীলীগের শাসনামলে,নেতারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। দেশের পট পরিবর্তনের পর সহকারী শিক্ষকরা অযৌক্তিকভাবে সেই টাকার দাবি করে উন্নয়নের কথা বলেছেন। তাদের দাবি মেনে না নেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন,রোববার( ০৪মে) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মৌখকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগের দেওয়া অভিযোগ তদন্ত চলছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এই বিভাগের আরও খবর....
ThemeCreated By bdit.Com
Share