December 22, 2025, 8:23 am
Logo
শিরোনামঃ
প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে থেরাপি সেবা সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া এখন সময়ের দাবি সাভার পৌর ৯নং ওয়ার্ডে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ক্লাবের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ ‘আশুলিয়ার বাইদগাওয়ে জমি সংক্রান্ত বিরোধ, বসতবাড়িতে তালা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে’ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসঃ ১০ ডিসেম্বর দিচ্ছে ডাক, মানবাধিকার মুক্তি পাক। আশুলিয়ায় ফুটপাত হকার মুক্ত করে, ভাদাইল প্রাইমারি ফ্রেন্ডস ক্লাব এর উদ্যোগে যাত্রী ছাউনি নির্মাণ সাভারে ইয়াজ উদ্দিন সরকার স্মৃতি মিনিবার ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত শহীদ নূর হোসেন দিবস আজ সাভারে ঐতিহাসিক ৭ ই, নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে, সালাউদ্দিন বাবুর পক্ষে আলোচনা সভা  সাভার পৌরসভায় জামায়াতের নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত
নোটিশঃ
দেশব্যাপি জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি আবশ্যক। নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ এস সি/ সমমান পাস। যোগাযোগঃ 01715247336

প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে থেরাপি সেবা সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া এখন সময়ের দাবি

মোঃ আরিফুল ইসলাম 2
নিউজ আপঃ Monday, December 22, 2025

প্রতিবন্ধী মানুষ সমাজের বোঝা নয়—তারা এই দেশের সমান অধিকারপ্রাপ্ত নাগরিক। সংবিধান ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার অনুযায়ী তাদের শিক্ষা, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের অধিকার থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, থেরাপি ও পুনর্বাসন সেবার অভাবে দেশের বহু প্রতিবন্ধী শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক আজও স্বাভাবিক জীবন থেকে বঞ্চিত। বিশেষ করে গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জন্য এই সেবা এখনো প্রায় অধরাই থেকে গেছে বলেন সাভার, সিআরপি,ইন্টার্ন, স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্ট, রিয়াদ মাহমুদ।

 

বর্তমানে অটিজম, সেরিব্রাল পালসি, কথা–ভাষা ও যোগাযোগ সমস্যা, স্ট্রোক–পরবর্তী জটিলতা কিংবা ককলিয়ার ইমপ্লান্টপ্রাপ্ত শিশুদের ক্ষেত্রে থেরাপি সেবা বিলাসিতা নয়, বরং জীবনমান নির্ধারণের প্রধান শর্ত। অথচ প্রয়োজনীয় থেরাপি পেতে অনেক পরিবারকে ঢাকাসহ বড় শহরে বারবার আসতে হয়। এতে একদিকে বাড়ে চিকিৎসা ব্যয়, অন্যদিকে তৈরি হয় মানসিক চাপ ও সামাজিক বৈষম্য।

 

সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো—দেশের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে এখনো থেরাপিস্ট নেই। চিকিৎসক আছেন, রোগ নির্ণয় হয়, ওষুধ দেওয়া হয়; কিন্তু পুনর্বাসন ও থেরাপি সেবা না থাকায় চিকিৎসা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি ও ফিজিওথেরাপি ছাড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কার্যকর উন্নয়ন সম্ভব নয়—এ সত্য আমরা বারবার উপেক্ষা করছি।

 

এই প্রেক্ষাপটে আমার দৃঢ় মত হলো—প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থায়ীভাবে থেরাপিস্ট নিয়োগ এখন সময়ের সবচেয়ে জরুরি দাবি। থেরাপি সেবা শহরকেন্দ্রিক থাকলে চলবে না। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও সমানভাবে এই সেবার অধিকার রাখে। উন্নত দেশগুলোতে থেরাপিকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়; বাংলাদেশেও সেই দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা জরুরি।

 

থেরাপি সেবা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ, তা কয়েকটি উদাহরণেই স্পষ্ট। স্ট্রোক বা দুর্ঘটনা–পরবর্তী রোগীরা থেরাপি ছাড়া স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন না। ককলিয়ার ইমপ্লান্টপ্রাপ্ত শিশুর শ্রবণক্ষমতা কার্যকর করতে নিয়মিত স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি অপরিহার্য। অটিজম, সেরিব্রাল পালসি, ডাউন সিনড্রোম কিংবা শেখার সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি থেরাপি ছাড়া অগ্রগতি কল্পনাই করা যায় না।

 

সরকারি হাসপাতালে থেরাপি সেবা চালু হলে সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে উপকৃত হবে, গ্রামীণ পরিবারগুলোর শহরমুখী ভোগান্তি কমবে এবং দেশের পুনর্বাসন ব্যবস্থার মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হবে। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যব্যবস্থা আরও মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়ে উঠবে।

 

আমাদের মনে রাখতে হবে, থেরাপি চিকিৎসা কেবল রোগ নিরাময়ের বিষয় নয়। এটি একজন মানুষকে সমাজে অন্তর্ভুক্ত করা, আত্মমর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া এবং স্বাবলম্বী করে তোলার একটি কার্যকর মাধ্যম। যে শিশু কথা বলতে পারে না, থেরাপির মাধ্যমেই তার কথা বলা ও শিখা শুরু হয়। যে ব্যক্তি স্ট্রোকে আক্রান্ত, থেরাপিই তাকে নতুন করে বাঁচার শক্তি দেয়।

 

অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়তে হলে দয়া বা সহানুভূতির জায়গা থেকে নয়, অধিকার ও নীতির জায়গা থেকে চিন্তা করতে হবে। শহর–গ্রামের সেবার বৈষম্য কমানো এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

 

থেরাপি ও পুনর্বাসন সেবা সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া শুধু স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন নয়, এটি একটি মানবিক বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি। এখনই সময়—এই বাস্তব ও ন্যায্য দাবিকে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্ব দেওয়ার।


এই বিভাগের আরও খবর....
ThemeCreated By bdit.Com
Share