চাঁদপুরের সোহেল রানা হত্যা মামলায় ১৬ বছর বয়সী আসামির ওপর পুলিশি নির্যাতনের কথা জেনেও পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ওই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করায় চাঁদপুর আদালতের এক ম্যাজিস্ট্রেটকে শো’কজ করেছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে চার সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মামলার ওই আসামিকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেন। আদালতে আসামির পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার রিমি নাহরিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, একটি মোবাইল ফোনকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের শিক্ষার্থী সোহেল রানা ২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট খুন হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ হত্যার ঘটনায় ফরহাদ, মেহেদী ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদের প্রত্যেকেই হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
এদের মধ্যে আসামি ফরহাদ হাইকোর্টে জামিন আবেদন করে। তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানিকালে আইনজীবী দাবি করেন, ফরহাদ যে স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে তাতে ম্যাজিস্ট্রেট তার বয়স ১৬ বছর উল্লেখ করেছেন। অথচ পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ১৯ বছর। আইনজীবী বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতেই ম্যাজিস্ট্রেট বলছেন যে আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। আসামির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে, এটা জানার পরও ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিস্ট পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে জবানবন্দী রেকর্ড করেছে।
আইনজীবী আরো বলেন, আসামির বয়স যদি ১৬ বছর হয় তবে তো তার বিচার হবার কথা শিশু আদালতে। ওই জবানবন্দীর কপি দেখে হাইকোর্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আদালত বলেন, বিচারকের সামনে হাজির করা আসামির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে কীনা তা দেখার দায়িত্ব তার। আসামির শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন থাকলে সে অনুযায়ী তার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। পুলিশ নির্যাতন করলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। এর পরও আসামির জবানবন্দী গ্রহণ করায় হাইকোর্ট সংশ্লিস্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে শোকজ করে আদেশ দেন। পাশাপাশি আসামির বয়স নির্ধারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন।