রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে বাড়ী-ঘর, জমিসহ সর্বস্ব বিক্রি করে টাকা পরিশোধ করার পরও অব্যহত চাপের মুখে সাড়ে ৩ বছর ধরে পালিয়ে বেড়ানো পাটনী পরিবারকে পুর্ণবাসন করেছে এলাকার যুব সমাজ।
এ বিষয়ে পত্রিকায় গত ৩১ মার্চ “ বালিয়াকান্দিতে সুদেকারবারীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে পাটনী পরিবার ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে সাংবাদিক সোহেল রানা, নারুয়া ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, বাপ্পী আহম্মেদ আক্কেল, শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মহিদুল ইসলামসহ এলাকার যুব সমাজের উদ্যোগে গৃহহারা মনোরঞ্জন সিকদারের বসবাসের জন্য সরকারী জমিতে একটি টিনের ঘর, ল্যাট্রিনসহ বসবাসের জন্য নির্মাণ করা হয়।
রবিবার দুপুরে উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের বাকসাডাঙ্গী গ্রামে মনোরঞ্জন সিকদারের জন্য নির্মিত ঘরে তুলে দেওয়া হয়। এসময় বালিয়াকান্দি উপজেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি ও উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সনজিৎ কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ দলিত এন্ড মাইনরিটি হিউম্যান রাইটস মিডিয়া ডিফেন্ডার ফোরামের সহ-সভাপতি সোহেল রানা, সাংবাদিক এস,এম রাহাত হোসেন ফারুক, নারুয়া ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, বাপ্পী আহম্মেদ আক্কেল, শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলামসহ এলাকার যুব সমাজ উপস্থিত ছিলেন। জানাগেছে, উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের বাকসাডাঙ্গী গ্রামের মনোরঞ্জন সিকদার।
পাটনী পরিবার হওয়ায় নারুয়া খেয়াঘাট ইজারা নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় জীবন যাপন করে আসছিলেন। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে কয়েকজন সুদে কারবারীর নিকট থেকে টাকা গ্রহণ করে। টাকা পরিশোধ করতে একমাত্র বসত ভিটা ও ঘরবাড়ী বিক্রি করে দেয়। পরে সাহাপাড়া বাসা ভাড়া করে থাকে। টাকা পরিশোধ করার পরও সুদে কারবারীদের অব্যহত চাপের মুখে সাড়ে ৩বছর আগে মনোরঞ্জন সিকদার, তার প্রতিবন্ধী স্ত্রী পুষ্পরানী সিকদার, ছেলে রতন সিকদার, পুত্রবধু অসিমা সিকদার রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়। পালিয়ে থেকে এখন মানবেতর জীবন-যাপন করেন।
এলাকায় ফিরতে চেয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছে ফোন দিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন। মনোরঞ্জন সিকদার বলেন, আজ আমি সকল দুঃখ ভুলে গেছি। আমাকে যারা বসবাসের ঠাই করে দিয়েছেন তাদের জন্য আমার আমৃত্যু আশিবাদ রইল। আমি সকলের নিকট সুস্থতার জন্য দোয়া চাই। নারুয়া ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম বলেন, মনোরঞ্জন সিকদারের কাকা এলাকায় ফিরতে চান, বিষয়টি নিয়ে নারুয়া ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাংবাদিক সোহেল ভাইসহ এলাকার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে সাথে আলোচনা করি । সবাই আশ্বস্থ করেন। একটি জমি নির্ধারণ করে ঘর উত্তোলন করে তাকে বসিয়ে দিতে পেরে আনন্দ লাগছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আম্বিয়া সুলতানা বলেন, মনোরঞ্জন সিকদারের জন্য ঘরটি নির্মাণ করেছে এলাকার যুব সমাজ। কাজটি খুবই প্রশংসার দাবী রাখে। ওই জমিটি সরকারী হওয়ায় একজন ভুমিহীন হিসেবে মনোরঞ্জনকে বন্দোবস্ত প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।