এক বছর আগেও ঈদ মানে ভোগান্তির অপর নাম ছিল দৌলতদিয়ায়-পাটুরিয়া ফেরিঘাট।কারণ সে সময় এ রুট দিয়ে প্রতি দিন কয়েক হাজার যাবাহন ও লক্ষাধিক যাত্রী পারাপার হতো।সে সময় এই নৌপথে যানজট লেগেই থাকতো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরি পারের অপেক্ষায় থেকে ভোগান্তির শিকার হতেন চালক ও যাত্রীরা।
তবে পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে সেই ভোগান্তি দূর হয়েছে। এই নৌপথে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কমেছে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। ফলে বর্তমানে যাত্রী ও যানহবানের জন্য এখন বসে থাকে ফেরি।
ঘাট সংশ্লিষ্টরা বলছে এবারের ঈদে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে এ নৌরুটে ২০টি ফেরি ও ৩৩টি লঞ্চ চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে আসন্ন ঈদযাত্রায় ঘাটে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না যাত্রীদের।
অপরদিকে ঘাট এলাকার নিরাপত্তায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকে তৎপর রয়েছে জেলা পুলিশসহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট সম্পূর্ণ ফাঁকা।যদিও ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। এদিকে যানবাহনের অপেক্ষায় বসে আছে ফেরি। বর্তমানে দৌলতদিয়া প্রান্তের ৭টি ঘাটের মধ্যে চালু রয়েছে ৩, ৪ ও ৭ নম্বর ঘাট।
অন্যদিকে নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ১ ও ২ নম্বর ঘাট বন্ধ রয়েছে দীর্ঘ কয়েক বছর। এছাড়া গত বছরের ভাঙনে বন্ধ হয়ে গেছে ৫ নম্বর ঘাট। ৬ নম্বর ঘাটটি বন্ধ রয়েছে অ্যাপ্রোচ সড়ক উঁচু হয়ে যাওয়ায়।
স্থানীয় এক দোকানী বলেন,আগের মতো আর দৌলতদিয়ায় ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ নেই। গত বছর পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে এই রুটে যাত্রীদের ভোগান্তি পৌহাতে হয় না।কারণ দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের বেশিরভাগ গাড়ি পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা যায়।এবছর ও এই ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের তেমন চাপ হবে না।
মিনি পিকাপ চালক আব্দুল রহমান বলেন, এই পথে খুব কম আসা হয়। কারণ রাজবাড়ী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা যেতে ৩ ঘন্টা সময় লাগে। আজ ঘাটে এসেই ফেরি পেয়ে গেছি। সামনে ঈদ তার পরও তেমন চাপ দেখছি না। ঈদের কয়েক দিন আগে চাপ বাড়বে। তবে পর্যাপ্ত ফেরি থাকলে যানযট হবে না।
স্থানীয় আকবর আলী বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে যানযট সৃষ্টি হয় নাই। গত ঈদেও যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয় নাই,এবারও হবে না।কারণ আগে ফেরির অপেক্ষায় গাড়ি থাকতো এখন গাড়ির অপেক্ষা ফেরি থাকে। কখনো ফেরিতে পর্যাপ্ত গাড়ি না হলেও ফেরি ছেড়ে দিচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, এবার ঈদে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে এ রুটে ছোট বড় ২০টি ফেরি থাকবে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এরুটে কোনো যানজট নাই। ফলে যাত্রী ও যানবাহন এসেই সরাসরি ফেরির দেখা পাচ্ছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদে ঘর মুখি মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে বাস, লঞ্চ, ফেরি ও মহাসড়কে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও যাত্রীদের হয়রানি কমাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে এক্সিকিউটি ম্যাজিস্ট্রেট।