ঢাকা পল্লীবিদুৎ সমিতি-৩ এর শিমুলতলা জোনাল অফিসে মাসের পর মাস ঘুরে সেবা পাচ্ছে না সাধারণ গ্রাহকরা। বিভিন্ন ওজুহাতে তাদের ফাইল আটকিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ওই অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে। তবে তার সাথে যাদের সখ্যতা আছে তাদের এধরণের কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না বলে জানান গ্রাহকরা। উল্টো তাদের ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম-কানুন ছাড়াই পেয়ে যাচ্ছে সকল সেবা।
জানাযায়, ওই অফিসের সদ্য বিদায়ী এজিএম মোতালেব হোসেন ও জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার রিপন মিলে স্টেকিং সিট তৈরি করে রক্ষণাবেক্ষণ দেখিয়ে সরকারি অর্থ অপচয় করে একজন গ্রাহকের সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।এরআগে, সাভার পৌর এলাকার ওয়াপদা রোডের রেজাউল করিম নামে ওই ব্যক্তি তিনবার আবেদন করেও একটি পরিত্যক্ত ট্রান্সফমার সরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। পরে শিমুলতলা জোনাল অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনি ওই কাজ পল্লীবিদুতের খরচে ৫/৭ দিনের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার তার পছন্দ মতো করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানাগেছে।এছাড়াও ওই গ্রাহকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শিমুলতলা জোনাল অফিসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ।
অন্যদিকে, মজিদপুর এলাকার বাসিন্দা বেলায়েত হোসেন গত জুন মাসে তার বাড়ির জন্য একটি থ্রি ফেস লাইনের আবেদন করেন শিমুলতলা জোনাল অফিসে। কিন্তু ৫মাস পেরিয়ে গেলেও তার বাড়িতে এখন পর্যন্ত বিদুৎ সংযোগ পাননি তিনি।
অন্যদিকে, গত ০৪ সেপ্টেম্বর হইল চেয়ারে বসে সজল শিকদার ও মিজানুর রহমান নামে দুইজন ব্যাক্তিকে সেবা দিয়ে দুটি নামসর্বস্ব নিউজ পোর্টালে নিউজ করিয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড থেকে অভিনন্দন বার্তা নিয়েছেন শিমুলতলা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো: মাহবুবুর রহমান।
কিন্তু ওই অফিসের সেবার মান বাস্তব চিত্র বিভন্ন। ওই অফিসে সেবাগ্রহীতারা বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের একটি পর্যবেক্ষক দল পাঠি ওই জোনাল অফিসের প্রকৃত সেবার মান যাচাই-বাছাই করে তাকে অভিনন্দন বার্তা দেওয়ার দাবি জানান।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ডিজিএম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নিয়ম তৈরি করেন। সে সব সময়ে অনিয়ম করেন। তার বিরুদ্ধে অফিসের কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। সে সিঙ্গেল ফেস মিটার দিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে শিমুলতলা জোনাল অফিসের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার রিপন মিয়া বলেন, পৌর এলাকার ওয়াপদা রোডের কলেজিয়েট স্কুলের সামনের রক্ষণাবেক্ষণেরর কাজের জন্য এজিএম স্যার স্টেকিং সিট তৈরি করতে বলেন। আমি সেভাবে ওই সিটটা তৈরি করেছি। এছাড়া আর কিছু বলতে পারবো না।
কিন্তু রিপন মিয়া একাজের নোট ও স্টেকিং সিট তৈরি রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় উপস্থাপন করেন। তবে সরজমিন গিয়ে ওই স্থানে আরো ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুতের খুটি রয়েছে। সে বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেননি।
এবিষয়ে শিমুলতলা জোনাল অফিসের সদ্য বিদায়ী এজিএম মোতালেব হোসেন বলেন, আমি ওই কাজের বিষয়ে কিছুই জানি না। ওই অফিসে যারা আছে তারা একাজ করেছে। এখন তো আমি ওই অফিসে নাই।
অভিযোগের বিষয় ফোনে জানতে চাইলে শিমুলতলা জোনাল অফিসের ডিজিএম মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানিনা। আমাকে তথ্য দিন বিষয়টা দেখছি।
শিমুলতলা জোনাল অফিসের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা পল্লী বিদুৎ সমিতি-৩ এর সিনিয়র জেনারেলে ম্যানেজার মোল্লা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, সঠিক সময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা দাবি করেছেন, সেবার মান উন্নত করতে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।