ভারতে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের কারণে নায়ক বিবেচনা করা হয় আন্না হাজারেকে। তার অনশনের পরিপ্রেক্ষিতেই সরকার লোকপাল বিল পাস করতে বাধ্য হয়। সেই আন্না এবার আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
তার বক্তব্য, কৃষকদের দাবি মানা না হলে ফের অনশনে বসতে পারেন। আর এটাই হবে তার জীবনের শেষ অনশন।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্র রাজ্যের আহমেদনগর জেলার নিজ গ্রাম রালেগাঁও সিদ্ধিতে সাংবাদিকদের আন্না বলেন, সরকার শুধু ফাঁকা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। এতে আমার আস্থা নেই। দেখা যাক, কেন্দ্র আমার দাবিদাওয়া নিয়ে কী ব্যবস্থা নেয়। এক মাসের সময় চেয়েছে সরকার। তাই জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত সময় দিয়েছি। দাবি না মিটলে ফের অনশন করব।
গান্ধীবাদী সমাজকর্মী হিসেবে ভারতজুড়ে সমাদৃত আন্না হাজারে। তার বয়স এখন ৮৩ বছর। প্রায় তিন বছর ধরে কৃষকদের স্বার্থে আন্দোলন করে চলেছেন তিনি। সরকারের কাছে একগুচ্ছ দাবিদাওয়াও পেশ করেছেন।
সম্প্রতি সংসদে পাস হওয়া তিনটি কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন কৃষকরা। দিল্লির সিংঘু সীমানায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন পাঞ্জাব ও হরিয়ানাসহ বিভিন্ন রাজ্যের কৃষক।
সেই আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে দাবি আদায়ে আরও একবার অনশনকে হাতিয়ার করতে চলেছেন আন্না হাজারে।
১৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহকে চিঠি লিখেছিলেন আন্না। চিঠিতে তিনি বলেছেন, এমএস স্বামীনাথান কমিটির সুপারিশগুলো কার্যকর করতে হবে এবং কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারণে ‘কমিশন ফর এগ্রিকালচারাল কস্ট অ্যান্ড প্রাইসেস’ (সিএসিপি)-কে স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। এই দাবি না মানা হলে অনশনে বসার হুমকি দিয়েছিলেন আন্না। এরপর মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকার হরিভাউ বাগাড়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কেন্দ্রের কৃষি আইন সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেন।
কৃষকের আন্দোলন শুরুর পর ৮ ডিসেম্বর কৃষকদের ডাকা ধর্মঘটে সমর্থন জানাতে এক দিনের প্রতীকী অনশন করেন আন্না হাজারে। জানুয়ারির মধ্যে কোনো সমাধান সূত্র না বেরোলে আমরণ অনশনে যাবেন তিনি।
জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অনশনের মাধ্যমে শান্তিকামী পথে দাবি আদায় করার কারণে আন্নার বিশাল জনসমর্থন রয়েছে। ভারত সরকার তার এই ব্যাপক জনসমর্থনকে ভয় পায় এবং তিনি অনশন শুরু করলে তা আমলে নেয়।
কৃষকের জন্য তার অনশনের হুমকির পর সরকার কতটুকু আমলে নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।