July 14, 2025, 3:13 am
Logo
শিরোনামঃ
বাঘায় মাদ্রাসার সরকারি বরাদ্দকৃত প্রকল্পের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা এসএসসিতে তাহসান মাহমুদ চৌধুরী গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন অন্ধ মার্কেট রক্ষায় প্রতিবন্ধীদের মানববন্ধন — সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে উত্তাল সাভার ১০০গ্রাম গাঁজাসহ সাইফুল ইসলাম আটক কারাগারে গলায় ফাঁস দিলেন সাভার উপজেলা আওয়ামীলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ঈদুল আযহা উপলক্ষে SLA মানবাধিকার সংস্থার চেয়ারম্যান মোঃ জে এইচ রানার শুভেচ্ছা বার্তা বাঘা উপজেলায় ১৪১৩০ পরিবারের মাঝে ভিজিএফ চাল বিতরণ বাঘায় ট্যাপেন্ডাডল ট্যাবলেটসহ আটক ১ পশু কেনাকাটা ও ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে কাজ করছে র‍্যাব আশুলিয়া রিপোর্টার্স ইউনিটি আত্মপ্রকাশ ; সভাপতি সৌরভ ও সম্পাদক সাকিব
নোটিশঃ
দেশব্যাপি জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি আবশ্যক। নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ এস সি/ সমমান পাস। যোগাযোগঃ 01715247336

কিশোর গ্যাং: দায় কার?

অলটাইম নিউজ ডেক্স 291
নিউজ আপঃ Thursday, January 14, 2021

কিশোর গ্যাং যে কত ভয়াবহ হয়ে উঠেছে তা গত ১১ জানুয়ারি পুলিশের আইজি বেনজীর আহমেদের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে৷ তিনি বলেছেন, ‘‘পুলিশের জন্য এই কিশোর গ্যাং বা কিশোর অপরাধীরাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন৷’’

এই কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে পরিবারের ভূমিকাকেই সবচেয়ে বড় বলে মনে করেন পুলিশ প্রধান৷ তিনি র‌্যাব সদর দপ্তরের অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘পিতামাতা সন্তান জন্ম দিয়েছেন, তার দায়-দায়িত্বও আপনাকে নিতে হবে৷ দায়-দায়িত্ব যদি নিতে না পারেন, তাহলে সন্তান জন্ম দিয়েছেন কেন?’’

ডিএমপির অপরাধ পর্যালোচনার তথ্য অনুযায়ী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ৪০টির মতো কিশোর গ্যাং রয়েছে৷ প্রতিটি গ্যাং-এর সদস্য সংখ্যা ১৫-২০ জন৷ পুলিশ সূত্র জানায়, গত এক বছরে ঢাকায় অন্তত পাঁচটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা৷ এর মধ্যে উত্তরার কিশোর গ্যাং সবচেয়ে আলোচিত৷ সেখানে একাধিক গ্যাং রয়েছে৷ ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে উত্তরায় ডিসকো এবং নাইন স্টার গ্রুপের দ্বন্দ্বে নিহত হয় কিশোর আদনান কবির৷ তার পরের মাসে তেজকুনি পাড়ায় দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে খুন হয় কিশোর আজিজুল হক৷ ঢাকার বাইরে থেকেও প্রায়ই কিশোর গ্যাং-এর দ্বন্দ্বে খুনখারাবির খবর পাওয়া যায়৷

বরগুনার নয়ন বন্ড তার ০০৭ গ্রুপ নিয়ে জনসম্মুখে রিফাত শরিফকে কুপিয়ে হত্যা করে৷ এ হত্যার জন্যে ১১ কিশোরকে কারাদন্ড দিয়ে বরগুনার আদালত বলেছেন, ‘‘সারাদেশে কিশোর অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে৷ গডফাদাররা এই কিশোরদের ব্যবহার করছে৷’’

গত বছর সাভারে স্কুল ছাত্রী নীলা হত্যায় কিশোর গ্যাং জড়িত৷ আর ওই হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি মিজানুর রহমান কিশোর গ্যাং লিডার৷ আর তার গডফাদার স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা৷


ওই বছরের ৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় দুই কিশোর গ্যাংয়ের বিরোধে নাঈম নামের এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়৷ একই এলাকায় কিশোর গ্যাং-এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় গত বছরের ১ এপ্রিল শরিফ হোসেন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়৷

সারাদেশের প্রত্যন্ত এলাকাতেও এখন কিশোর গ্যাং সক্রিয়৷ অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা তাদের ব্যবহার করেন৷ আর সেই ক্ষমতায় গ্যাংগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে৷ হত্যা ছাড়াও ধর্ষণ, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে৷

কিশোর-কিশোরীরা কথায় কথায় মেজাজ দেখাচ্ছে, অথবা কেউ ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে রাখছে৷ কেউ চুলে রং করছে বা অসম্ভব জোরে গান শুনছে৷ তার ওপর পড়াশোনায় মনোযোগ একেবারেই নেই! মাথায় যেন তাদের একটাই প্রশ্ন – ‘‘আমার বয়সি, আমার বন্ধুরা কী করছে?’’ এই অনুভূতিকে আয়ত্বে আনা টিন-এজারদের নিজেদের জন্যও কিন্তু খুব কঠিন৷ জানান জার্মনির শিশু-কিশোর বিশেষজ্ঞ ও মনশ্চিকিৎসক রমুয়াল্ড ব্রুনার৷

কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের তথ্য মতে যে কিশোররা ওইসব কেন্দ্রে আছে তাদের ২০ শতাংশ হত্যা এবং ২৪ শতাংশ নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামি৷ ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সের কিশোররাই বেশি অপরাধে জড়াচ্ছে৷ কিশোররা, চুরি, ছিনতায়ের মত অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে বলে কেন্দ্রের তথ্যে জানা যায়৷

পুলিশের সাবেক আইজি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নূর মোহাম্মদ জানান, তারা এই বিষয়টি নিয়ে কমিটিতেও আলাপ করেছেন৷ পরিস্থিতি যে ভয়াবহ তাতে কোনো সন্দেহ নাই৷ তবে তিনি মনে করেন, ‘‘এখানে পুলিশ সব কিছু করতে পারবে না৷ পরিবার ও সমাজকে দায়িত্ব নিতে হবে৷ আর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রগুলোরও দায়িত্ব আছে৷ প্রত্যেক থানায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের একজন করে কারেকশন অফিসার আছেন তারাও দায়িত্ব পালন করেন না৷’’

পুলিশের আইজিপি বেনজীর আহমেদ গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ১৮ বছরের নিচে বয়স হলে শিশু বিবেচনা করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন৷ নূর মোহাম্মদও মনে করেন, মানসিক বয়সও বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন৷ কারণ পুরোপুরি পরিকল্পনা করে ফৌজদারী অপরাধ করার সক্ষমতা যার আছে তার সাধারণ বয়স ১৮-এর নিচে হলেও মানসিক বয়স বেশি৷

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার চার কোটি শিশু-কিশোর৷ এরমধ্যে এক কোটি ৩০ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর আইন ও অপরাধ বিজ্ঞানের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন মনে করেন, ‘‘ওই শিশুরা তো অপরাধে জড়িয়ে পড়তেই পারে৷’’

অধ্যাপক কার্জনের মতে, নিম্নবিত্ত পরিবারে যেমন বাবা -মা দুইজনই কাজে বেরিয়ে যান, তেমনি মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত পরিবারেও বাবা-মা সন্তানকে সময় দেন না৷ তারা নানা ধরনের গেম, সিনেমা দেখে, একাকিত্বের কারণে অপরাধী হয়ে ওঠে৷ আর সমাজ ও রাষ্ট্রে অপরাধ, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারও তাদের অপরাধে প্রলুব্ধ করে৷

রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবার শিশুদের জন্য শিশুবান্ধব পরিবেশ দিকে ব্যর্থ হচ্ছে৷ তাদের মধ্যে মূল্যবোধ তৈরি করতে পারছে না৷ যার পরিণতি আমরা এখন দেখছি বলে তিনি মনে করেন৷

তবে পরিবারের নজরদারি ও মূল্যবোধ এই কিশোর অপরাধ অনেক কমিয়ে আনতে পারেন বলে মনে করেন তিনি৷


এই বিভাগের আরও খবর....
ThemeCreated By bdit.Com
Share