প্রবাসী শ্রমিকদের ব্যাপারে কাফালা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। উপসাগরীয় অঞ্চলের সর্বাধিক জনবহুল দেশটিতে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত শ্রম সংস্কার কার্যকর হলে বিদেশি কর্মীরা তাদের নিয়োগকারীদের অনুমতি ছাড়াই চাকরি পরিবর্তন করতে পারবেন।
রোববার (১৪ মার্চ) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, কাফালা পদ্ধতিতে একজন কফিল কিংবা নিয়োগকর্তা কোনও বিদেশি কর্মীকে স্পন্সর করলে সে কর্মী সৌদি আরবে যেতে পারেন এবং সেখানে যাওয়ার পর ওই নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ করতে হয় তাকে। এক্ষেত্রে ওই কর্মীর কাজ পরিবর্তনসহ সার্বিক সব বিষয় নির্ভর করে নিয়োগকর্তার ওপর। প্রায় সাত দশক ধরে সৌদিতে চালু থাকা এই পদ্ধতির কারণে সেখানে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকরা কোনও ধরনের স্বাধীনতা ভোগ করতে পারেন না। তাদেরকে তাদের নিয়োগকর্তার ইচ্ছামত চলতে হয়। গত বছরের নভেম্বরে দেশটির মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় কাফালা পদ্ধতিটি সংশোধন করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানায়, কাফালা পদ্ধতির কারণে শ্রমিকরা, বিশেষত যারা নির্মাণ শ্রমিক এবং গৃহকর্মীর কাজ করে তারা নিয়োগকর্তাদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হতো। নিয়োগকর্তারা শ্রমিকদের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করে, অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করতে বাধ্য করা এবং তাদের মজুরি দিতে অস্বীকার করার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
কাফালা পদ্ধতি পরিবর্তন হলে অভিবাসী কর্মীরা তাদের কাজের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে চাকরি পরিবর্তন করতে পারবে। শ্রমিকরা তাদের চুক্তির মেয়াদকালে চাকরি স্থানান্তর করতে সক্ষম হবে তবে তারা তাদের নিয়োগকারীদের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে অবহিত করতে হবে।
শ্রমিকরা তাদের নিয়োগকর্তার অনুমতি ব্যতীত অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণ করার অনুমতি দিয়ে ‘প্রস্থান অনুমোদনের’ থেকেও অব্যাহতি পাবেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যেসব শ্রমিককে কাজের চুক্তি দেওয়া হয় না বা তাদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি তাদের জন্যও বিধান রাখা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি উপসাগরীয় দেশ সাম্প্রতিক সময়ে প্রচলিত তাদের কাফালা পদ্ধতিতে সংস্কার করেছে।