১৯৮৪ সালের ১মার্চ মহকুমা থেকে জেলা হিসেবে রূপান্তরিত হয় রাজবাড়ী।রেলের শহর বলেই পরিচিত এ জেলা। আবার পদ্মার কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা এ জেলা ‘পদ্মাকন্যা’ হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে।
পাঁচটি উপজেলা নিয়ে এ জেলা গঠিত। এখানে রয়েছে ৩ টি পৌরসভা ও ৪২টি ইউনিয়ন। এ জেলার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা, চন্দনা, গড়াই, হড়াই, কুমার ও চিত্রা নদীসহ অসংখ্য খাল বিল।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের রয়েছে সাহিত্যিক মীর মোশাররফ হোসেনের আবাসস্থল। এ ছাড়াও এ জেলায় রয়েছে অসংখ্য গুণিজন। এ জেলার রয়েছে বিভিন্ন ইতিহাস ও ঐতিহ্য।
কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজবাড়ী জুট মিল, গোল্ডেশিয়া জুট মিলসহ নতুন নতুন কল কারখানা তৈরি হচ্ছে। বিনোদনের জন্য রয়েছে নানা আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় স্থান। দিন দিন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাস্তা, অবকাঠামো উন্নয়নসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগছে।
রাজবাড়ীর মধ্যে রয়েছে সড়কপথ, রেলপথ, নৌপথ এবং দৌলতদিয়াসহ দুইটি নৌরুট। রয়েছে দেশের একমাত্র অ্যাক্রোবেটিক সেন্টার।
উল্লেখ রয়েছে, এ জেলা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮১১ সালে ফরিদপুর জেলা সৃষ্টি হলে রাজবাড়ীকে তার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৮৩ সালে সরকার প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে প্রতিটি থানাকে মানউন্নীত থানায় রূপান্তরিত করলে রাজবাড়ীকে মানউন্নীত থানা হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৩ সালের ১৮ই জুলাই থেকে সরকার অধ্যাদেশ জারি করে সকল মানউন্নীত থানাকে উপজেলায় রূপান্তরিত করার। ফলে রাজবাড়ী উপজেলা হয়। গোয়ালন্দ মহকুমার প্রশাসনিক দপ্তর রাজবাড়ীতে থাকায় অবশেষে ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ সকল মহকুমাকে জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে রাজবাড়ী জেলায় রূপান্তরিত হয়।
নাওয়ারা চৌধুরীগণের বাড়ি স্বদেশীদের কাছে রাজবাড়ী নামে অভিহিত ছিল। মতান্তরে রাজা সূর্য কুমারের নামানুসারে রাজবাড়ী জেলার নামকরণ হয়। ভৌগলিক কারণে এ জেলার পূর্বে মানিকগঞ্জ, পশ্চিমে কুষ্টিয়া, উত্তরে পাবনা, দক্ষিণে ফরিদপুর ও মাগুরা জেলা অবস্থিত।
রাজবাড়ীর প্রধান নদ-নদী ৬টি। পদ্মা, গড়াই, চন্দনা, চত্রা, হড়াই ও কুমার নদী। রাজবাড়ী পদ্মা তীরবর্তী অঞ্চল হওয়ায় মৎস্য সম্পদের আধারে রয়েছে। ইলিশ, বাগাইড়, আইড়, বোয়াল, পাঙ্গাস, কাতলসহ স্বাদু পানির বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায় এখানে। এ জেলায় প্রায় ১১ লাখ মানুষের বসবাস।