মাত্র ১৭ বছর বয়সে ২০০৮ সালে কুয়াকাটা সংলগ্ন গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে গিয়েছিল জেলে মিলন। সঙ্গীয় ছিল আরও দুই জেলে ফারুক (১৩) ও খোকন (২৫)। ঝড়ের কবলে পড়ে মাছধরার নৌকাটি। তখন থেকে নিখোঁজ ছিল ওই তিন জেলে। কিশোর বয়সে নিখোঁজ থাকার একযুগ পর মিলন আকন (৩০) নামে ওই জেলে বৃহস্পতিবার দুপুরে কুয়াকাটা পৌরশহরে নিজ বাড়ি ফিরে এসেছে। ঝড়ের কবলে মাছধরার নৌকাসহ তিন জেলের নিখোঁজে এত দিন ভুলতে বসেছিল তাদের পরিবার। পরিবারের ধারণা জন্মেছিল সাগরে ডুবে নিশ্চিত মারা গেছে।
একযুগ পর জেলে মিলন বাড়ি ফিরে আসায় এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। কিছুটা অবিশ^াস্য মনে হলেও পরিবারের লোকজনের চোখেমুখে বইছে আনন্দাশ্রæ। প্রতিবেশী,স্বজনরা ও বন্ধু বান্ধবরা পরখ করে মিলিয়ে নিচ্ছে তাদের হারিয়ে যাওয়া মিলনকে। কুয়াকাটা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিলনের বাবা শাহ আলম আকন বাড়িতে নিখোঁজ মিলন ফিরে আসায় তাঁকে একনজর দেখতে কৌতুহলী এলাকাবাসী এখন ভিড় করছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, ২০০৮ সালে মিলন তার দুই সহযোগী জেলে ফারুক (১৩) ও খোকন (২৫) কে নিয়ে একটি মাছধরা নৌকায় ইলিশ শিকারের জন্য গভীর সমুদ্রে যায়। ওইদিন সাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকাটি। এরপর থেকে তাদের আর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। নিখোঁজ তিন জেলে পরিবারের সবার ধারণা ছিল এদের সকলের সলিল সমাধি ঘটেছে। সর্বশেষ দু’দিন আগে (মঙ্গলবার) পাশর্^বর্তী বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলায় একটি সড়কে তার এক আত্মীয়ের সামনে পড়লে মিলনকে চিনতে পায়। এরপর কুয়াকাটায় মিলনের পরিবারকে জানানো হয়। তারা সেখানে গিয়ে নিশ্চিত হবার পর বৃহস্পতিবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয় মিলনকে।
কুয়াকাটা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিলনের বাবা শাহ আলম আকন ও মা মিনারা বেগম এবং বড় ভাই রুবেল আকন দীর্ঘ ১৩ বছর নিখোঁজ থাকা মিলনকে সনাক্ত করে বাড়ি নিয়ে এসছেন। মিলনের মা মিনারা বেগম বলেন, ‘ম্যুই মোর পোলাঠারে দীর্ঘ ১৩ বছর পর ফিরয়্যা পাইছি। এতেই মোরা খুশী হয়ছি। তয় পোলাডা এ্যাখন অসুস্থ। আল্লার কাছে দোয়া করত্যাছি সুস্থ্য হইলে সব ঘটনা হুনতে পারমু।
কুয়াকাটা পৌরসভার ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনির শরীফ বলেন, মিলন নামের ওই ছেলেটি ১৭ বছর বয়সে গত ২০০৮ সালে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁর পরিবার ফিরে পেয়েছে। বর্তমানে মিলন অসুস্থ থাকায় তার নিখোঁজ থাকার বিষয় কিছুই জানা যায়নি। কাউন্সিলর আরও জানান, মিলনের সাথে অপর নিখোঁজ দুই জেলের এখনো কোন সন্ধান মেলেনি।