ক্ষেতের বুক ভরে গেছে সবুজ রসালো ফল তরমুজ। যথাযথ চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করায় ফলনও ভালো হয়েছে এবার। আর আগাম চাষ করার কারনে ইতিমধ্যে বাজারে নিয়ে আসা হয়েছে হাজার হাজার তরমুজ। নতুন ফল হিসেবে বিক্রিও হচ্ছে হচ্ছে। তবে এমন সময়েও আনন্দের হাসিটা যেন ঠিকঠাক হাসতে পারছেন না রাঙ্গামাটির চাষীরা।
সঠিক বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা না থাকায় পাইকারি দামে মধ্যসত্ত্বভোগীদের হাতেই কম দামে তুলে দিতে হচ্ছে পরিশ্রমের ফসল। সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের মগবান ইউনিয়নের তারিঙ্গে পাড়া, লংগদুসহ বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে ছেয়ে আছে তরমুজের আবাদি ফসলে।
ফল মোটাতাজা করতে সার, কীটনাশক ও যাবতীয় কৃষি উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে ফলন যেমন ভালো হয়েছে তেমনী আবহাওয়া ভালো থাকার কারণে দ্রুত বেড়ে উঠেছে তরমুজ। ফলে দ্রুত সময়ে বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে রসালো এই তরমুজ বাজারজাতকরণের প্রক্রিয়া হওয়ায় বাজারে নিয়ে আসা হয়েছে জানান এখানকার চাষীরা।
চাষী আব্দুর রহিম বলেন, ক্ষেতে দুই-তিন লাখ টাকা খরচ করলে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা পাওয়া যায়। হ্রদের পানি থেকে জমি ভেসে উঠলে আমরা তরমুজের চারা রোপণ করি। এবার আমাদের চাষের ফলনও ভালো হয়েছে, লাভবান হবো বলে তো আশা করছি বাকিটা আল্লাহর উপর নির্ভর।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক বলেন, আমাদের পরিসংখ্যান মতে রাঙ্গামাটি জেলায় এ বছর ২৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। খুব অল্প সময়ে সময়ে এর ফলনও পেয়েছেন কৃষক ভাইয়েরা। এর মধ্যে আমাদের সিংহভাগ তরমুজ হয় লংগদু উপজেলায়। তবে গত কয়েক বছর ধরে সদর উপজেলায়ও তরমুজ আবাদের প্রবণতা বেড়েছে। এতে করে অনেকেই এখন জমিতে তরজুমের চাষ করছে।
এ বছরের আমাদের তথ্যমতে শুধু মাত্র রাঙ্গামাটি জেলা সদরের ৪০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। আর তরমুজের এ ধরণের আবাদ হতে থাকলে আমরা আশা করছি কৃষক ভাইরা উপকৃত হবেন।
কৃষক ভাইদের প্রশিক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন সহায়তাসহ চাষ পদ্ধতি, সার, কীটনাশক ও যাবতীয় কৃষি উপকরণ বিষয়ে সকল প্রকারের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা। তবে জমিতে তরমুজের ভালো ফলন হলেও বাজারজাতকরণের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় ফলগুলো খুবই কম দামে মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের হাতে তুলে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে লাভের সম্ভাবনা বেশ কমে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ওই এলাকার বেশ কয়েকজন চাষী।