প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রাতের আকাশে উড়িয়েছে রঙ-বেরঙের
ফানুস। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ফানুস উড়ায় তারা। দেখলে মনে হয় যেন আকাশের অসংখ্য তারার মেলা। মাঝে মধ্যে দুই একটি ফানুস তারার মত নিভু নিভু করে নিচে পড়ছে।
এসব আকাশ ছোঁয়া রঙ-বেরঙের ফানুস উৎসব দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় ছিল রাখানই পল্লীগুলোর আশ পাশে। আর এ প্রবারণা উৎসবকে ঘিরে মেতে ওঠেছিল রাখাইন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বয়সি নারী-পুরুষ। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সূত্রে জানা গেছে, এই দিনে গৌতম বুদ্ধ ধর্ম প্রচার শুরু করেন।
তাই এই দিনটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রতি বছরই এই দিনে উপজেলার বৌদ্ধ বিহার গুলোতে সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। আত্মশুদ্ধি ও অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণে রাতে আকাশে উড়িয়ে দেয়া হয় একের পর এক নানা রঙের ফানুস।
আয়োজকরা জানান, দীর্ঘ একমাস ধরে রং-বেরংয়ের কাগজ ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে বানানো হয়েছে ফানুস। এ উৎসব ঘিরে তা আকাশে উড়ানো হয়। উপজেলার কুয়াকাটাসহ অমখোলাপাড়া, মি¯্রীপাড়া, কলাচানপাড়া ও নড়াপাড়াসহ ২৮ টি পাড়ায় প্রায়
শতাধিক ফানুস বানানো হয়েছে। তা এই প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে উড়ানো হবে। তেননান রাখাইন বলেন, প্রতি বছর এদিনে আকশে ফানুস উড়ানো হয়।
এ বছরও প্রবারণা পূর্ণিমায় আকাশে ফানুষ উড়ানো হয়েছে। আজও বৃহস্পতিবার রাতে বেশ
কয়েকটি ফানুস উড়ানো হবে। আর ফানুস উৎসব এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিনত হয়েছে। নানা পোশার মানুষ এ উৎসবে মিলিত হয়ে আনন্দ উপভোগ করে। কেন্দ্রিয় কৃষক লীগের ধর্ম বিষয়ক সহ-সম্পাদক, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি
প্রচার সংঘের পটুয়খালী ও বরগুনা জেলার সভাপতি নিউ নিউ খেইন বলেন, প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবকে ঘিরে আমরা ব্যাপক আয়োজন করে থাকি।
এবার করোনামহামারির কারনে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পূর্ণিমা উৎসব
পালন করা হয়েছে। মানুষের মনে হিংসা বিদ্বেষ ভুলে, সুন্দর সত্যের পথে চলতে ও মহামারী করোনা থেকে বাচঁতে সন্ধ্যায় বিহারে বিহারে ফানুস উড়ানো হয়েছে।
আর জাতি ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে নরনারী সমবেত হয়ে ফানুস উৎসব উপভোগ করে। আমাদের রাখাইন সম্প্রদায়েরা যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ন ভাবে এ উৎসব পালন করে আসছে।
মহিপুর থানার ওসি খন্দকার আবুল খায়ের বলেন, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য রাখাইন পল্লীগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।