শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
জামাল হত্যা মামলার বাদী ইমরানের বসত বাড়ি, দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনায় হরিলোট প্রতিবাদে মানববন্ধন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশেষ মতবিনিময় সভা মাদ্রাসার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন কলাপাড়া প্রকল্পে চাকুরি, লভ্যাংশ প্রদান সহ ৭ দফা দাবিতে পায়রা  তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্থদের মানব বন্ধন গণতন্ত্রকে পরিবারতন্ত্র ধ্বংস করছে : নতুনধারা   রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি-দুর্নীতি-সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যর্থ সকল সরকার : মোমিন মেহেদী ফেনী ও নোয়াখালীতে বন্যাদুর্গতদের পাশে এসএলএ ২২ দিন পর লাশ উত্তোলন ৩ আসামি কারাগারে  ত্রান প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট, এবার পর্নোগ্রাফী আইনে মামলা দায়ের
নোটিশঃ
দেশব্যাপি জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি আবশ্যক। নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ এস সি/ সমমান পাস। যোগাযোগঃ 01715247336

উপকূলজুড়ে হালনাগাদ তালিকার ফাঁদ, করোনার দুর্যোগে সুবিধাবঞ্চিত পেশাদার জেলেরা

মো.ফরিদ উদ্দিন বিপু,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি / ২৬৩
নিউজ আপঃ বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৪ অপরাহ্ন

বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিনে সমুদ্র উপকূলীয় জনপদে মৎস্য শিকারে নির্ভরশীল হয়ে জীবিকা নির্বাহ করে বিশাল এক জনগোষ্ঠীর প্রায় ৩৭ শতাংশ মানুষ। শুধু জীবীকার তাগিদেই নয় প্রতি মূহুর্তে জীবনের ঝুকি নিয়ে আহরিত মৎস্য বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতেও বিশাল এক ভূমিকা পালন করছেন পেশাদার জেলেরা।

নানান প্রতিকুলতার মাঝেও গভীর সমুদ্র থেকে নীল অর্থ আয়ের লক্ষে প্রতিবছরই ঝড়ের কবলে পড়ে প্রাণ হারান অনেক মৎস্য আহরণকারী। তাদের কারো কারো খোঁজ স্বজনেরা পেলেও অনেকেরই সলিল সমাধি হয়েছে অথৈ জলে । তবুও জীবন যুদ্ধে হার না মানা এসব সাহসী আতœনির্ভরশীল মানুষগুলো নির্ধারিত সময়ে কাঙ্খিত মৎস্য আহরনের লক্ষ্যে ছুটে যায় গভীর সমুদ্রসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে। আর এসব জেলেদের মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে সরকারী ভাবে তালিকা প্রনয়নের মাধ্যমে বিশেষ প্রনোদনা (ভিজিএফ) এর আওতায় আনলেও হালনাগাদ তালিকার ফাঁদে পড়ে সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছেন পেশাদার জেলেরা।

পহেলা নভেম্বর থেকে ত্রিশ জুন পর্যন্ত জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় পেশাদার অনেক জেলের কপালেই এখন চিন্তার ভাঁজ। গভীর সমুদ্র ও নদ-নদীতে মাছ ধরতে না পারায় খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে পেশাদার অসহায় হতদরিদ্র জেলে পরিবার গুলোতে। জেলেদের অভিযোগ ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের জেলে তালিকায় অর্ন্তভুক্ত মৎস্য শিকারিদের (ভিজিএফ) খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। দীর্ঘ এ সময়ে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ জেলে পেশা পরিবর্তণ করে ভিন্ন পেশায় ঝুঁকেছেন। তবে তালিকা হালনাগাদ না হওয়ায় বর্তমানে সরকারের প্রদেয় এই সুবিধা থেকে ছিটকে পড়েছেন সত্যিকারের জেলেরা।

সরেজমিনে ঘুরে কথা হয় লালুয়া ইউপির জেলে ষাটোর্ধ্ব  আবদুর রহিম’র সাথে। তিনি জানান, আমি ছোট বেলা থেকে এ পেশায় খেটে খাচ্ছি। বর্তমানে লকডাউন চলছে আবার ঝাটকা ধরা  বন্ধ। কিন্তু আমি চাল পাইনি। চাল পায় হোন্ডা চালক, দোকানদারসহ ভিন্ন পেশার মানুষ। তিনি আরো জানান, মাছ শিকারে গিয়ে ট্রলারসহ ঝড়ের কবলে পড়ে পাশর্^বর্তী দেশ ভারতে গিয়ে পৌঁছালে সেখানে দীর্ঘ আট মাস কারা ভোগের পর নিজ দেশে পৌঁছাতে পেরেছেন। জেলে কার্ড থাকা সত্বেও তালিকাভুক্ত হতে না পারায় তিনি বঞ্চিত হয়েছেন। ইলিশ শিকারী সাইদ হাওলাদার জানান, বাপ দাদাসহ সবাই এই পেশার মাধ্যমে সংসার চলে। কার্ড আছে তবুও চাল পাননি বলে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

সরকারের প্রতি ভীষন ক্ষোভ নিয়ে সাইদুল গাজীর অভিযোগ, পরিবারের সবাই মৎস্য শিকারী, তবু চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অ-পেশাদার জেলেরা বার বার চাল পাচ্ছেন কিন্তু তিনি পেশাদার হিসেবে চাল পাচ্ছেন না কেনো ?। দুধল হাওলাদারের অভিযোগ সারাবছর ঝড় ঝাপটা উপেক্ষা করে সাগর, নদী মোহনায় মাছ শিকার করে থাকেন তবুও স্থানীয় প্রভাবে তার নাম তালিকাচ্যুত হয়েছে। বিচার চাইবো কার কাছে। একই অভিযোগ ধুলাসার ও লচাপলী ইউপির শতাধিক জেলে সদস্যদের। জানতে চেয়ে কথা হয় লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ^াসের সাথে। তারও রয়েছে এন্তার অভিযোগ। তিনি বলছেন, আমার ইউনিয়নে ২৭ শতাধিক জেলে থাকলেও তালিকায় রয়েছে মাত্র ১৪’শ ৫০ জনের নাম। তালিকা হাল নাগাদ না হওয়ায় প্রায় অর্ধেক পেশাদার জেলেরা তাদের নিষেধাজ্ঞাকালীন দুর্যোগসহ চলমান করোনার দুর্যোগের মাঝেও সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমরা দেখে কষ্ট পেলেও তালিকার বাহিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে শীঘ্রই তিনি এই তালিকা হালনাগাদ করার অনুরোধ জানান।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অনুপ সাহা জানান, করোনার পরিস্থিতি স্বাভবিক না হওয়া পর্যন্ত হালনাগাদ তালিকা করা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দ্রæতই প্রতিটা ইউনিয়নে তালিকা প্রনায়ন করা হবে। এছাড়া ২০১৯ সালে হালনাগাদ তালিকার যে নীতিমাল হয়েছে সেই নীতিমালা মূলত করোনার কারনে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তিনি আরো জানান, উপজেলায় কার্ডধারী জেলেদের সংখ্যা ১৮ হাজার ৫’শ ৮ জন। এদের মধ্যে চলমান (ভিজিএফ) সুবিধাভোগী জেলে রয়েছেন ১০ হাজার ৫’শ ৯৩ জন। তবে চেয়ারম্যান সাহেবরা চেষ্টা করলে সমন্বয় করে চাল বিতরণ করতে পারেন ।


এই বিভাগের আরও খবর....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Share
Share